সোনার দাম আবারো বাড়ছে! ২০২৪ সালে আজকের বাজার দর কত?
সোনাকে বলা হয় মহামূল্যবান ধাতু। সোনা বহু প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের কাছে পরিচিত।এর চকচকে হলুদ বর্ণ, অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য, এবং গহনা হিসেবে এর ব্যবহার একে অনন্য করে তোলে ।
সোনার গহনার ইতিহাস ও ঐতিহ্য:
সোনার গহনার ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন মিশরে, সোনার গহনা সম্পদ, সৌন্দর্য এবং ঐশ্বর্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হত।বিভিন্ন দেশে সোনার গহনার ঐতিহ্য ভিন্ন। ভারতে, সোনার গহনা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতির সাথে জড়িত।বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সোনার গহনার নকশায় বৈচিত্র্য দেখা যায়। ঢাকার নকশাগুলোতে মিনাকারি কাজের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়, যেখানে চট্টগ্রামের নকশায় ফুল ও লতাপাতার নকশা বেশি দেখা যায়।
সোনার গুণাগুণ
- সে খুবই নরম।
- সোনা মরিচা ধরে না।
- তাকে পিটিয়ে পাতলা পাত বানানো যায়।
- অত্যন্ত পরিবাহী: বিদ্যুৎ ও তাপের ভালো পরিবাহী।
- ক্ষয়প্রতিরোধী: বাতাস ও পানিতে সহজে ক্ষয় হয় না।
- দুর্লভ: পৃথিবীতে সোনার পরিমাণ সীমিত।
বিভিন্ন ধরণের সোনার গহনা:
আজকাল সোনার গহনা নান্দনিক ডিজাইনে ও বিচিত্র আকারে পাওয়া যায়।
কানের দুল:
- ঝুমকা: ঝুলন্ত ডিজাইনের দুল, যা বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়।
- বুটি: কানের লতির সাথে লাগানো ছোট দুল।
- চাঁদের দুল: চাঁদের আকারের দুল, যা বিভিন্ন ডিজাইনে পাওয়া যায়।
গলায় পরার মালা:
- হার: গলায় পরার লম্বা গহনা।
- লকেট: হারের সাথে ঝুলিয়ে রাখার জন্য ছোট গহনা।
- মঙ্গলসূত্র: বিবাহিত নারীদের দ্বারা পরা বিশেষ ধরণের হার। নাসের দুল:
এছাড়াও আরও অনেক ধরণের সোনার গহনা পাওয়া যায়, যেমন:
হাতের আংটি:
- নাকফুল: নাকে পরার ছোট দুল।
- চুড়ি: হাতে পরার গহনা।
- পায়ের আংটি: পায়ে পরার আংটি।
- ব্রেসলেট: হাতে পরার লম্বা গহনা।
- কানের শাখা: কানের উপরে পরার গহনা।
এছাড়া অর্থ বিনিয়োগ এর জন্য সোনা ব্যবহার করা হয়, স্বর্ণমুদ্রা, বার হিসেবে।
আজকের স্বর্ণের দাম কত বাংলাদেশে ২০২৪?
বর্তমান বাজার অনুযায়ী সোনার মূল্য নিচে দেয়া হলঃ১ ভরি সোনার দাম কত?
১ ভরি সোনার দাম নির্ভর করে সোনার ক্যারেটের উপর।
22 ক্যারেট স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য কত?
বাংলাদেশে:
- ১ ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম): ৯২,৪৭৭ টাকা
- ১ আনা (০.৯৭২ গ্রাম): ৭,৯৫৬ টাকা
- ১ গ্রাম: ৭,৯৪০ টাকা
১ ট্রয় আউন্স (৩১.১০৩ গ্রাম): ১,৮৫২ মার্কিন ডলার
২১ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি কত?
১ ভরি: ১১.৬৬৪ গ্রাম
24 ক্যারেট স্বর্ণের দাম কত?
বাংলাদেশে:
- ১ ভরি: ৯৯,১৪১ টাকা
- ১ আনা: ৮,৫৯৫ টাকা
- ১ গ্রাম: ৮,৫৯০ টাকা
- 22 ক্যারেট: ৭,৯৪,০০০ টাকা
- 21 ক্যারেট: ৭,৪৫,০০০ টাকা
- 24 ক্যারেট: ৮,৫৯,০০০ টাকা
- 22 ক্যারেট: ২,৩৮৭ টাকা
- 21 ক্যারেট: ২,২৩৮ টাকা
- 24 ক্যারেট: ২,৫৭৮ টাকা
- বর্তমানে বাংলাদেশে সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকা।
- এই দাম গত ১৮ জানুয়ারী নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং তখন থেকে এটি অপরিবর্তিত রয়েছে।
- সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম অন্যান্য ক্যারেটের সোনার তুলনায় কম কারণ এতে খাদ অনেক বেশি থাকে।
- ২২ ক্যারেটের সোনার বিশুদ্ধতা ৯১.৬৭%, ২১ ক্যারেটের ৮৭.৫% এবং ১৮ ক্যারেটের ৭৫%।
- অন্যদিকে, সনাতন পদ্ধতির সোনার বিশুদ্ধতা ৭৫% এর কম।
- তবে, সনাতন পদ্ধতির সোনার গয়না অনেকেই পছন্দ করেন কারণ এটি টেকসই হয় এবং এর নকশা অনন্য হয়।
১ আনা সোনার দাম:
- ২১ ক্যারেট: ৩,৮৭৫ টাকা
- ২২ ক্যারেট: ৪,০০০ টাকা
- ২১ ক্যারেট: ৯,২৩৮ টাকা
- ২২ ক্যারেট: ৯,৬০০ টাকা
সোনার দাম পরিবর্তন হতে পারে, তাই সবসময় সর্বশেষ মূল্য পরীক্ষা করতে ভুলবেন না।তাই, আপনি পছন্দ অনুযায়ী সোনা কিনতে পারেন।
সোনার গহনা দীর্ঘস্থায়ী এবং উজ্জ্বল রাখতে নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সোনার গহনা পরিষ্কার রাখার কিছু টিপস
- সাবান বা রাসায়নিক ব্যবহার করবেন না: সাবান এবং রাসায়নিক সোনার আভা কমিয়ে দিতে পারে। পরিবর্তে, হালকা, নরম কাপড় দিয়ে শুকনো মুছুন।
- মৃদু ডিটারজেন্ট: হালকা ডিটারজেন্ট এবং উষ্ণ পানির মিশ্রণে সোনার গহনা ধুয়ে ফেলতে পারেন।
- টুথব্রাশ: পাতলা ব্রিসলযুক্ত টুথব্রাশ দিয়ে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে পারেন।
- অ্যামোনিয়া: অ্যামোনিয়া এবং পানির মিশ্রণে (1:1 অনুপাতে) সোনার গহনা ডুবিয়ে 10-15 মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
- পেশাদার দিয়ে পরিষ্কার: নিয়মিত পেশাদারদের দ্বারা সোনার গহনা পরিষ্কার করানো উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- আলাদা আলাদা বাক্সে সংরক্ষণ করুন: সোনার গহনা আলাদা আলাদা বাক্সে , টিস্যু বা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় রাখুন।
- আর্দ্রতা থেকে দূরে রাখুন: আর্দ্রতা সোনার গহনার ক্ষতি করতে পারে।
- রাসায়নিক থেকে দূরে রাখুন: সুগন্ধি, লোশন, ক্লোরিন ইত্যাদি রাসায়নিক থেকে সোনার গহনা দূরে রাখুন,
খাঁটি সোনা:
- হলমার্ক: সোনার গহনার বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য হলমার্ক খুঁজুন। বাংলাদেশে, সোনার গহনার জন্য তিনটি হলমার্ক প্রচলিত:
- বিআইএস 916: 22 ক্যারেট সোনার জন্য (91.6% খাঁটি)
- বিআইএস 750: 18 ক্যারেট সোনার জন্য (75% খাঁটি)
- বিআইএস 375: 9 ক্যারেট সোনার জন্য (37.5% খাঁটি)
স্পেকট্রোমিটার:
স্পেকট্রোমিটার মেশিন দিয়ে সোনার খাদ নির্ণয় করা যায়। সন্দেহ হলে, মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নিন ।
- ব্যবহারের উদ্দেশ্য: আপনার গহনার ব্যবহারের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ক্যারেট নির্বাচন করুন।
- নিত্যদিনের ব্যবহার: 18 ক্যারেট বা তার কম ক্যারেটের গহনা ব্যবহার করা টেকসই
- বিশেষ অনুষ্ঠান: 22 ক্যারেটের গহনা ঝলমলে এবং আকর্ষণীয়
বাজেট: ক্যারেটের সাথে সাথে সোনার দামও বৃদ্ধি পায়। আপনার বাজেট অনুযায়ী ক্যারেট নির্বাচন করুন
- পছন্দ: আপনার পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন নির্বাচন করুন।
- ট্রেন্ড: বাজারের ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা নিন, তবে আপনার পছন্দের সাথে আপস করবেন না।
- কারিগরি দিক: ডিজাইনের কারিগরি দিক বিবেচনা করুন। ঝালর, নকশা, পাথর ইত্যাদি যথাযথভাবে স্থাপিত আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন।
- বাজার দর: সোনার বাজার দর সম্পর্কে ধারণা নিন ।
সোনার গহনা কেনার সময়, শুধুমাত্র ডিজাইন এবং ট্রেন্ডের দিকে নজর না দিয়ে নিজের পোশাকের সাথে মানানসই ও নিজের স্টাইলের সাথে ফিট করে এমন গহনা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ।
পোশাকের ধরণ:
- ক্যাজুয়াল পোশাক: হালকা ও সূক্ষ্ম ডিজাইনের গহনা, যেমন পাতলা চেইন, ছোট্ট দুল, কানের দুল, নোজ পিন ।
- ফর্মাল পোশাক: ঝকঝকে ও ভারী ডিজাইনের গহনা, যেমন লম্বা চেইন, ঝুলন্ত দুল, বড়ো কানের দুল, টিকলি, নোজ রিং ইত্যাদি।
সোনার বর্তমান বাজার মূল্য কত?
বাংলাদেশে সোনার বাজার মূল্য প্রতিদিন পরিবর্তিত হয় এবং বর্তমান মূল্যের জন্য বিশ্বস্ত সোনা বিক্রির ওয়েবসাইট বা বাংলাদেশ ব্যাংকের আপডেট দেখতে হবে।
সোনা কেনার সেরা সময় কোনটি?
সোনা কেনার জন্য সেরা সময় হল বাজার মূল্য যখন স্থিতিশীল থাকে এবং দাম কম থাকে।
সোনার গহনা ভাঙানো উচিত কি?
সোনার গহনা ভাঙানো ব্যক্তিগত পছন্দ, গহনার ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে এবং বাজার মূল্যে বিনিময়ের হার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সোনা কি ভালো বিনিয়োগ?
সোনা দীর্ঘকালীন সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বিকল্প হিসেবে পরিচিত কারণ এটি মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে একটি সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
শেষ কথাঃআপনি যদি এইরকম আরও তথ্য জানতে চান সোনা গহনা সম্পর্কিত। তাহলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইটটি রেগুলার ভিজিট করতে পারেন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সোনা গহনা ও অন্যান্য ইনফোরমেটিভ সকল তথ্য পাবলিশ করি।