রমজান মাসের দোয়া, আমলসমূহ এবং সময়সূচি ২০২৪

মাহে রমজান মাস বছরের সব থেকে পবিত্র এবং শ্রেষ্ঠ একটি মাস। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয় স্তম্ভ হল সাওম বা রোজা পালন করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসলিমরা ২৯ বা ৩০ দিন সাওম রেখে থাকেন। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে রমজান মাসে ২৯ বা ৩০ দিন মুসলিমগণ সাওম পালন করে থাকেন। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস হল পবিত্র রমজান মাস। দীর্ঘ ১১ মাস পর এই রহমতের মাস আসে। রমজান মাসে পবিত্র আল কুরআন নাযিল হয়েছে। রমজান মাস হলো সওয়াব অর্জনের মাস। রমজান মাসে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন বিশ্বের সকল মুসলিমগণ।
রমজান মাসের দোয়া, আমলসমূহ এবং সময়সূচি

রোজা সর্ম্পকে আল কুরআনে অনেক আয়াতসমূহ রয়েছে। সূরা বাকারায় আল্লাহ তাআলা বলেন :- হে মুমিনগণ ! তোমাদের জন্যে সিয়ামের বিধান দেয়া হলো। যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববতীগণকে দেওয়া হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করতে পারো। ( সূরা বাকারাহ-১৮৩) 

সেহরির ও ইফতারের সময় সূচি ২০২৪ : রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪


নিম্নে রোজার সময়সূচি ২০২৪ - সেহরির ও ইফতারের সময়সূচি দেয়া হলো:

রমজান 

তারিখ ও বার

স্থান 

সেহরির সময় 

ইফতারের সময়

১ 

১২ মার্চ

মঙলবার

ঢাকা

৪:৫০ 

৬:০৯ 

১৩ মার্চ

বুধবার

ঢাকা

৪:৪৯

৬:১০

১৪ মার্চ

বৃহস্পতিবার

ঢাকা

৪:৪৮

৬:১০

১৫ মার্চ

শুক্রবার 

ঢাকা

৪:৪৭

৬:১১

১৬ মার্চ

শনিবার

ঢাকা

৪:৪৬

৬:১১

১৭ মার্চ

রবিবার

ঢাকা

৪:৪৫

৬:১২

১৮ মার্চ

সোমবার

ঢাকা

৪:৪৪

৬:১২

১৯ মার্চ

মঙলবার

ঢাকা

৪:৪৩

৬:১২

২০ মার্চ

বুধবার

ঢাকা

৪:৪২

৬:১৩

১০

২১ মার্চ

বৃহস্পতিবার

ঢাকা

৪:৪১

৬:১৩

১১

২২ মার্চ

শুক্রবার

ঢাকা

৪:৪০

৬:১৪

১২

২৩ মার্চ

শনিবার 

ঢাকা

৪:৩৯

৬:১৪

১৩

২৪ মার্চ

রবিবার

ঢাকা

৪:৩৮

৬:১৪

১৪

২৫ মার্চ

সোমবার

ঢাকা

৪:৩৭

৬:১৫

১৫

২৬ মার্চ

মঙলবার

ঢাকা

৪:৩৬

৬:১৫

১৬

২৭ মার্চ

বুধবার

ঢাকা

৪:৩৫

৬:১৬

১৭

২৮ মার্চ

বৃহস্পতিবার

ঢাকা

৪:৩৪

৬:১৬

১৮

২৯ মার্চ

শুক্রবার

ঢাকা

৪:৩২

৬:১৭

১৯

৩০ মার্চ

শনিবার

ঢাকা

৪:৩১

৬:১৭

২০

৩১ মার্চ

রবিবার

ঢাকা

৪:৩০

৬:১৮

২১

১ এপ্রিল

সোমবার

ঢাকা

৪:২৯

৬:১৮

২২

২ এপ্রিল

মঙলবার

ঢাকা

৪:২৮

৬:১৯

২৩

৩ এপ্রিল

বুধবার

ঢাকা

৪:২৭

৬:১৯

২৪

৪ এপ্রিল

বৃহস্পতিবার

ঢাকা

৪:২৬

৬:২

২৫

৫ এপ্রিল

শুক্রবার

ঢাকা

৪:২৫

৬:২০

২৬

৬ এপ্রিল

শনিবার

ঢাকা

৪:২৪

৬:২১

২৭

৭ এপ্রিল

রবিবার

ঢাকা

৪:২৩

৬:২১

২৮

৮ এপ্রিল

সোমবার

ঢাকা

৪:২২

৬:২২

২৯

১০ এপ্রিল

মঙলবার

ঢাকা

৪:২১

৬:২২

৩০

১১ এপ্রিল

বুধবার

ঢাকা

৪:২০

৬:২৩


যেহেতু রোজা চাঁদ দেখার উপর নির্ভর, সেহেতু উপরের সময়সূচি বদলানোর সম্ভবনা রয়েছে।

রমজান মাসের দোয়া সমূহ :

রমজান মাস দোয়া-দুরুদের মাস। এই মাসে কিছু বিশেষ দোয়া রয়েছে। যেমন : সেহেরির দোয়া , ইফতারের দোয়া , তারাবীহর নামাজের দোয়া। তাছাড়াও আরও অনেক দোয়া-দুরুদ পড়তে পারেন।
সেহরির দোয়া বা নিয়ত :
রোজা রাখার পাশাপাশি সেহরি অন্তত জরুরি। রোজার একটি আরবি নিয়ত রয়েছে। কিন্তু মনে মনে নিয়ত করেও রোজা রাখতে পারেন।

সেহেরির দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ হল :
নাওয়াইতু আন আছুমা গা দাম মিন শাহরি রমা দানাল মুবারা।ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতা কাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

ইফতারের দোয়া :
সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের মাধ্যমে রোজা সম্পুর্ণ করা হয়। রোজাদার ব্যক্তিরা ইফতারের সময় অনেক আনন্দে ইফতার করে।ইফতারের দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ : আল্লা হুম্মা লাকা ছুম তু ওয়া আলা রিয ক্কিকা ওয়া আফ তারতু বি রাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমিন।

ইফতারের পরের দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ :
জাহাবাজ জামাউ।ওয়া বতাল্লাতিল উ’রুকু।ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা আল্লাহ।

তারাবীহ নামাজের দোয়া :
তারাবীহ নামাজে ৪ রাকাত পর পর তারাবীহর দোয়াটি পড়ে থাকেন। এই দোয়াটি না পড়লেও তারাবীহ নামাজ হবে। কিন্তু ৪ রাকাত এর সময় বিশ্রামের সাথে সাথে এই দোয়াটি বা ইসতেগফার পড়া উত্তম।

তারাবীহ নামাজের দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ:
সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালা কুতি সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝ মাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদ রাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালি কিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়া মুত আবাদান আবাদ।সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রুহ।

রমজান মাসের কিছু আমল সমূহ :

রমজান মাসে বেশি বেশি আমল করুন এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। নিম্নে কিছু আমল দেয়া হলো:
  • নফল ইবাদতের মধ্যে প্রথম হলো পবিত্র কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা। কুরআন এর এক অক্ষর পড়লে আল্লাহ দশ নেকি দিয়ে থাকেন। রমজান মাসে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করবেন। রমজান মাসে সেহরির শেষে ফজরের নামাজের পর কুরআন তিলাওয়াত করুন।
  • রমজান মাসে সেহরির খাওয়ার সময় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়বেন। ফজরের নামাজের পূর্বে। কারণ এই সময় আল্লাহ রহমত বরকত আল্লাহ খুব বেশি নাজিল করেন। তখন আল্লাহ প্রথম আকাশে নেমে আসেন।
  • রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করবেন। বেশি বেশি দোয়া করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। রমজান মাস আল্লাহর কাছে চাওয়ার মাস। তাই রমজান মাসে দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি করে চাওয়া উচিত।
  • হযরত মহানবি (সঃ) বলেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে তোমরা ঈদ পালন কর। তাই সাবানের শেষ দিকে পশ্চিম আকাশে চাঁদ তালাশ করা উত্তম। এবং চাঁদ দেখে রোজা ত্যাগ করে ঈদ উদযাপন করা শ্রেয়।
  • রমজান মাসের একটি উত্তম আমল হলো রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা। শেষ দশকের সকল বিজোড় রাতে সম্ভব না হলে বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান করা শ্রেয়। যদি লাইলাতুল কদর পাওয়া যায় তবে নিম্নের দোয়া পড়া : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফা-ফু আন্নী’।
  • রমজান মাসে সমস্ত পাপ কাজ বর্জন করা উত্তম। রমজান মাসে ঝগড়া-ফাসাদ থেকে বিরত থাকা। মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকা। কারো গিবত না করা।

রমজান ও রোজা সম্পর্কে কিছু প্রশ্নোত্তর :

প্রশ্ন : কাযা রোজার সাথে কাযা তারাবীহ আদায় কর‍তে হবে কিনা ?

উত্তর : রোজা কাযা হয়ে গেলে রমজান মাসের পর কাযা রোজা আদায় করতে পারবেন। কাযা রোজা আদায় করতে কাযা তারাবীহ পরতে হবে না। শুধু কাযা রোজা আদায় করলে হবে।

প্রশ্ন : রোজা রেখে টিভি দেখা যাবে কিনা ?

উত্তর : রোজা রেখে টিভিতে হারাম দৃশ্য বা নাযায়েজ কিছু দেখা যাবে না। রমজান মাসে এগুলো দেখলে গুনাহ একটু বেশি হবে।

প্রশ্ন : রোজা রেখে থুথু বা লালা খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে কিনা?

উত্তর : রোজা অবস্থায় অনেক সময় মুখে থুথু বা লালা আসে। থুথু বা লালা খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙবে না গুনাহ ও হবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে থুথু বা লালা মুখে রেখে খেয়ে ফেললে রোজা মাকরূহ হয়ে যাবে কিন্তু রোজা ভাঙবে না।

শেষ কথাঃ আপনি যদি এই ধরনের আরো কনটেন্ট চেয়ে থাকেন রমজান মাস সম্পর্কে তাহলে আমাদের আজকের এই ওয়েবসাইট আকুয়া বিডি ফলো করতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন