কলেরা রোগের লক্ষণ - কলেরা রোগের প্রতিকার
কলেরা রোগের লক্ষণ
কলেরা একটি সংক্ৰামক রোগ। ভিব্রিও কলেরা (vibrio cholerae)নামের ব্যকটেরিয়াঘটিত ক্ষুদ্রান্তের একটি সংক্রামক রোগ। একসময় এ রোগকে ওলাঠা রোগ নামে অবিহিত করা হতো।
এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের প্রধান লক্ষণ হলো ঘন ঘন পায়খানা হওয়া,ঘন ঘন চাল ধোয়া পানির মতো পায়খানা হওয়া,বমি বমি ভাব,শির টান পড়া,
একসময় এ রোগের প্রচুর প্রার্দুরভাব ছিল, গাঙ্গেয় বদ্বীপ এলাকায় মহামারি আকার ধারণ করত, এতে সঠিক চিকিৎসার অভাবে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতো।
কলেরা রাগের ব্যকটেরিয়া কিছুটা কমা(,) আকৃতির দেখতে হয়। ১৮৮৩ সালে বিজ্ঞানী কক ভিব্রিও কলেরা(vibrio chorelrae)-র জীবাণু আবিষ্কার করেন।কমা আকৃতির ব্যকটেরিয়া,যা মূলত দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। জীবাণুটি শরীরে প্রবেশের পর ক্ষুদ্রান্তের গায়ে লেগে দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে।জোরাল সংক্রমণের ফলে একজন সুস্থ মানুষের রক্তচাপ অস্বাবাভিক ভাবে কমে যেতে থাকে।
কলেরার ব্যকটেরিয়া
কলেরা রোগের লক্ষণ সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলঃঅনেক সময় অধিকাংশ সংক্রমিত মানুষ জানতে ও পারেনা যে সে এ রোগে সংক্রমিত হয়েছে।এ রোগের লক্ষণ গুলি নিম্নরুপঃ
১)ঘন ঘন পায়খানা হওয়াঃ
ঘন ঘন চাল ধোয়া পানির মত দেখতে পায়খানা হয়ে থাকে।অতি দ্রুত শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। এক ঘন্টায় প্রায় এক লিটার পানি বেরিয়ে যায়।যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।কলেরার কারনে পায়খানা হলে তাকে বোঝার একমাত্র উপায় হলো।একটি বির্বণ ও চাল ধোয়া পানির মত এবং দুধের মত জল দেখতে পাওয়া যায়।
২)বমি বমি গা গোলানো ভাবঃ
কলেরার প্রাথমিক ধাপে রোগীর বমি বমি ভাব, বা বমি হতে পারে।যা বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে থেমে থেমে হয়ে থাকে।
৩)জলশূন্যতা দেখা দেওয়াঃ
কলেরা শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্য এতই তিব্র হতে পারে যে শরীর থেকে ১০% বা তার চেয়ে বেশি তরল নিষ্কাশিত হয়।যার ফলে খিটখিটে ভাব,মূখ ফ্যকাশে দেখানো,বেশী বেশী পানি পিপাসা পাওয়া,চামড়া কুচকে যাওয়া,চোখ ফোলা ভাব,মূত্রত্যাগ এর পরিমান কমে যাওয়া বা একেবারেই মূত্রত্যাগ না হওয়া।জলশূন্যতার কারণে দেহের ভারসাম্যকারী খনিজ পদার্থ গুলি ও হ্রাস পায়।
উল্লেখঃ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু উপসর্গ দেখা দেয়,
যেমনঃ জ্বর,খিচুনি,প্রচন্ড ঝিমুনি,কোমা
কলেরা হওয়ার কারণ সমূহঃ কলেরা রোগের জীবাণুর নাম কি
কলেরা বিভিন্ন কারণে দেখা দেয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ নিচে আলোচনা করা হলোঃদূষিত পানিঃ জনসাধারণের ব্যবহার্য দূষিত পানি পান ও ব্যবহারের ফলে এ রোগের সংক্রমণ হয়।যে সমস্ত অঞ্চলের মানুষ দূষিত পান,ব্যবহার করে থাকে,সেই অঞ্চলে এ রোগের প্রার্দূরভাব বেশী।
ফল ও শাকসবজিঃ দূষিত অঞ্চলের ফল ও সবজী থেকে ও এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে।কম্পোস্ট বিহীন সার বা সেচের জলের সাথে মিশ্রিত অপরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন এগুলিকে দূষিত করে,যার ফলে এ রোগ ছড়াতে পারে।
রান্না না করা সামুদ্রিক মাছঃ একটি দূষিত উৎসের মাছ,যেমন কাঁচা বা ভালোকরে রান্না না করা সামুদ্রিক মাছ খেলে,যেমন সেলফিস খেলে কলেরা দেখা দিতে পারে।
শস্যঃ শস্য থেকে ও কলেরার ব্যকটেরিয়ার উৎপত্তি হতে পারে। বহুক্ষণ ধরে রান্না করা শস্য ও মিলেটকে ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দিলে এ ব্যকটেরিয়া সেখানে জন্মায়।
কলেরা রোগ নির্নয়ঃ কলেরা রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার
মল পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যকটেরিয়াকে শনাক্ত করা যেতে পারে,ডাক্তাররা এ রোগ নির্নয়ের জন্য কলেরা ডপস্টিক টেস্ট করে থাকে। দ্রুত নিশ্চিত করা গেলে, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রায়োজন।
জটিলতা এড়াতে কলেরা শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
- ১) শরীরে ইলেকট্রলাইটের ঘাটতি পূরণে ওরাল রিহাইড্রেশন সল্টস খেতে হবে,
- ২) তরল নিষ্কাশন কমাতে ধমনির মধ্যে তরল চালনা করতে হবে।
- ৩) এবং পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করতে হবে।
- জীবানু মুক্ত অথবা ফোটানো জল পান করা।
- দূধ খাওয়ার পূর্বে ভালো ভাবে ফুটিয়ে খাওয়া।
- খাবার ভালো ভাবে রান্না করা।
- কাঁচা শাকসবজি,মাছ মাংস ভালো ভাবে রান্না করে খাওয়া
- পরিষ্কার পানি পান করা।
- ঘরের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
- টিকা নেওয়া
- সংক্রমিত অঞ্চল থেকে খাবার আনা বন্ধ করা
অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে আপনি ও সংক্রমিত হতে পারেন,এমতাবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন,অন্যথায় এটি আর ও জটিল আকার ধারন করে,যথাযথ চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পরে।তাই এ বিষয় নিজে সর্তক হন টিকা নিম এবং অন্যকে এ বিষয় সর্তক করুন।
কলেরা বিষয়ক কিছু সাধারন প্রশ্নঃ
১)কলেরা কি এখনও হয়
উত্তর:হ্যা, আফ্রিকা,দক্ষিন- পূর্ব এশিয়ার দেশ গুলোতে এখনও এটি দেখা দেয়।
২)কলেরার জন্য কোন ব্যকটেরিয়া দায়ী?
উত্তরঃ কলেরার জন্য ভিব্রিও কলেরা নামক ব্যকটেরিয়া দায়ী।৩)কলেরা কিভাবে ছড়ায়?
উত্তরঃ কলেরা মল এবং দুষিত জলের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়ায়।৪)কলেরা হলে কোন খাবার গুলি খেতে হবে?
উত্তরঃ যেহেতু কলেরার কারণে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। তাই যে খাবার গুলি শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে তেমন খাবার খেতে হবে।যেমন স্যলাইন,ডাবের পানি,প্রচুর পরিমান খেতে হবে।
লেখক এর শেষ কথা: আপনি যদি এই ধরনের আরও কনটেন্ট চান। তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন রেগুলার। এখানে এই ধরনের প্রত্যেকটি কন্টেন্ট পাবলিক করা হয়।