চুল কাটার স্টাইল - চুল কাটার স্টাইল ছবি ২০২৪

লেয়ার কাটের ধরনটা হল, মাথার পিছনের দিকে একটু ছোট এবং কানের দুই পাশে একটু ঢেকে ছোট করে কাটা। আর সামনের চুল খুব ছোটও থাকবে না, আবার খুব বড়ও থাকবে না। মোটামুটি সব বয়সের ছেলেদেরই এ ধরনের চুলের কাট বেশ মানাবে।

স্পাইক কাট এখন তরুণদের কাছে খুব জনপ্রিয়। অনেকে শুধু মাথার সামনের অংশ স্পাইক করছেন। যাদের মুখ কিছুটা গোল, তারা কানের দুই পাশে চুল একটু ছোট রাখতে পারেন। এতে মুখটা ভালমতো ফুটে উঠবে। যাদের মুখ কিছুটা লম্বাটে ধরনের, তারা কানের দুই পাশে কিছুটা চুল রেখে দিলে ভাল মানাবে।

মাঝারি লম্বা চুল থাকলে ক্ল্যাসিক ট্যাপার হেয়ার কাটটি নিতে পারবেন। এই স্টাইল টিতে মাথার পিছনে ও কানের উপরের চুল খাটো করে কাটা‌ হয়ে থাকে। তবে এই স্টাইলে কপালের চুল লম্বা রাখা হয়, এতে করে কপালের ওপর ছড়িয়ে রাখা যায় বা ব্যাক ব্রাশ করা যায়।

ইমো স্টাইলের জন্যও মাঝারি লম্বা চুল থাকা প্রয়োজন। ইমো স্টাইল করতে অনেকটা এলোমেলোভাবে চুল কাটা হয়। কিন্তু সামনের চুল বড় রাখা হয়। আর মাথার পিছনের চুল স্পাইক স্টাইলে ছোট রাখা হয়। সামনে এবং কানের পাশের বড় চুলগুলি মুখমন্ডলের ওপর প্রায় ছেয়ে থাকে। এটিকে ‘ইমো সুইপ’ বলে।

ক্রু কাটের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মাথার পেছনের ও পাশের চুল খুব ছোট করে কাটা হয়, কিন্তু ওপরের চুলগুলি ক্রমান্বয়ে কিছুটা বড় ও খাড়া করে রাখা হয়। ক্রু কাট পরিচর্যা করা খুব সহজ।

এটি নতুন প্রজন্মের মধ্যে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে জনপ্রিয় হেয়ার স্টাইল। বেশিরভাগ পুরুষকেই এখন এই হেয়ার স্টাইলে দেখা যাচ্ছে। যদি কেউ এখনও দ্বিধায় ভোগেন যে, ফ্রিঞ্জ ব্যাংস হেয়ার স্টাইল তাঁদের যাদের চেহারা সঙ্গে যাচ্ছে না তাদের জন্য এই স্টাইলটি উপযুক্ত।

মুলেট:

এই কাটিং এ সামনের দিকের চুলগুলো ও দুই সাইডের চুলগুলো ছোট করা হয় কিন্তু পিছনের চুলগুলো বড় রাখা হয়।

এই স্টাইলটি সাধারণত খেলোয়াড়রা দিয়ে থাকে। যারা খেলোয়ারদের কাটিং পছন্দ করেন তারা এই করতে পারেন। খেলোয়াড়দের মত অধিকাংশ এই কাটিং দিয়ে থাকে।

এই কাটিংটি সাধারণত মুখে আকৃতি ও গঠন অনুযায়ী দিতে হয়। এই কাটিং এর মূল বিশেষত্ব হচ্ছে চুলগুলো একপাশে সিতি করে রাখা যায়।

এই স্টাইলে পিছনের দিক ছোট করে সামনের দিক একটু লম্বা বা বড় রাখা হয়। সাধারণত গোলাকার চেহারার মানুষজনদের এই কাটিংটি বেশি মানায়।

যাদের চুল একদম সোজা এবং যাদের চুল একটু ঢেউ খেলানো তাদেরকে এই কাটিং এ বেশ মানায়। এই কাটিংটি ছেলেমেয়ে উভয়ই দিতে পারে।

তরুণদের কাছে এই স্টাইল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এই স্টাইলে চুল কাটলে সব দিকের চুলই ছোট করে কেটে হেয়ার জেল দিয়ে স্টাইল করা যায়। অনেকে একে কক কাট বলে। এবং বাংলাদেশের বাইরে এটা আন্ডার কাট নামে বেশ পরিচিত।

এই স্টাইলটিতে কানের কাছের চুল ও পিছের চুল একদম থাকে না বললেই চলে। পেছনের মাথার অর্ধেক থেকে ও কানের অত্যন্ত এক ইঞ্চি উপর থেকে চুল কাটা শুরু হয়।

এই স্টাইলের ক্ষেত্রে মাথার মাঝখানের চুলগুলো লম্বা হবে। এর সাথে পাশের চুলগুলোর ১-৪ মি.লি লম্বা হবে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনি একবার চুল কেটে আসলে ১-৩ মাস আর সেলুনে যেতে হবে না।

ক্লাসিক কোউফ খুবই খুবই জনপ্রিয় ও ট্রেন্ডি একটি চুলের কাট। এ ক্ষেত্রে যাঁরা চুল একটু বড় রাখেন, তাঁদের জন্য এই ধরনের কাট বেশ ভাল। সামনের চুলগুলোর লম্বা রাখতে হবে ৭ ইঞ্চির মতো। আর পাশের চুলগুলো লম্বা হবে ২ ইঞ্চির মতো। কলেজ পড়ুয়াদের জন্য ক্লাসিক কোউফ সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি হেয়ার স্টাইল

নব্বইয়ের দশকের সবকিছুই যেন ঘুরেফিরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই সময়েই। আর চুলের কাটেও তা দেখা যাচ্ছে। হেয়ার স্টাইলিস্টদের মতে, পাওয়ার বব কাটে আত্মবিশ্বাসী লুক আসে। খুব বেশি লম্বাও নয়, আবার খুব বেশি ছোটও নয়। ‘শার্প’ একটা লুক দেয়। এবার ঈদে এটিই হতে পারে ট্রেন্ডি।

ভিনটেজ স্টাইলের এই চুলের কাটিং বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয়। এ বছর গায়িকা সেলিনা গোমেজকে নির্দিষ্ট এই চুলের কাটে দেখা গেছে। সামনে থেকে লং লেয়ার কাট রেখে কাঁধের কাছে এসে চুল পড়বে এই কাটে।

খুব ছোট চুল না চাইলে এই কাট বেছে নিতে পারেন। নব্বই দশকের জনপ্রিয় সিরিজ ‘ফ্রেন্স’-এর একটি চরিত্রের মাধ্যমে এই চুলের কাটিং বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এই চুলের কাটের সব থেকে ভালো দিক হলো, এটি সব ধরনের মুখের গঠনের সঙ্গেই মানানসই। লব কাটিং হতে পারে অনেক ধরনের। তাই চুলের গঠন বুঝে বেছে নিতে হবে যেকোনো একটি। যাতে আপনার চুল কিছুটা হলেও ঘন দেখায়।

চুল বড় হলে খুব সাধারণ একটি সমস্যা হলো, চুল কেটে ছোট না করতে চাওয়া। সে ক্ষেত্রে ফেস ফ্রেমিং লেয়ার কাট হতে পারে সমাধান। কারণ, এই কাটে মুখের সামনের অংশে চুল কাটা হয় কিছুটা ছোট করে। আর পেছনে থাকে লম্বা। এতে আপনার লুকে আসবে পরিবর্তন আবার চুলের দৈর্ঘ্যও কমবে না।

যাদের চুলে খুব বেশি জট ধরে, তারা এই চুলের কাট বেছে নিতে পারে। কোঁকড়া চুলেও এই কাট সহজেই মানিয়ে যাবে। তাই এবার ঈদে এই কাট হতে পারে আপনার পছন্দ।

যদি আপনার মুখায়ব একটু লম্বাটে হয়ে থাকে তাহলে চিন লেন্থ বব কাট হেয়ার স্টাইলও ট্রাই করে দেখতে পারেন। লম্বাটে মুখের সঙ্গে মানানসই এই হেয়ার স্টাইল।

যে সকল বাচ্চাদের ঢেউ খেলানোর চুল ও একদম সোজা চুল তাদের ক্ষেত্রে এই কাট বেশ মানাবে। এছাড়া গোলাকার বা ডিম ভাকৃতিক চেহারার যেকোনো ছেলে ও মেয়ের বাচ্চাদের এই কাটিং মানাবে। তবে লম্বা চেহারায় বড় চুলেও এই কাটিং টি বেশ মানায়।

তোড়াসামার কাট

পেছনে একদম ছোট ও সামনে বড় রেখে তোড়াসামার কাট দেওয়া হয়। যে সকল শিশুর গোলাকার চেহারা ফোন সোজা লম্বা চুল তাদের বেশ মানায় এই কাটিংটিতে।

যাদের চুল কম ও মুখ লম্বাটে তাদের ভালো লাগবে। এই কাটের সঙ্গে সামার বব করে নিলেও ভালো লাগবে।

ছেলেদের জন্যও আছে নানা রকম চুলের কাট। ছেলেশিশুদের জন্য রয়েছে স্পাইক, স্ট্রেট, বাজ, লেয়ার, ক্রু, রাহুল, বয়, সিজার কাট ইত্যাদি।

ক্রু কাটে মাথার পেছনের, পাশের চুলগুলো কিছুটা ছোট ও খাড়া করে রাখা হয়। এটি বেশ জনপ্রিয় এখন।ক্রু কাটে চুল সাজিয়েছে মডেল মারজানস্পাইক স্পাইক কাটে মাথার সব দিকের চুলই ছোট করে কেটে জেল ব্যবহার করে স্টাইল বজায় রাখা হয়।

যেহেতু বৃত্তাকার মুখগুলোতে রেখা বা ডিটেইলস কম থাকে। তাই চুলে প্রচুর ডিটেইলস দিলে মানানসই দেখায়। গোলাকার মুখের পুরুষদের জন্য চুলের স্টাইল খুঁজে বের করা প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে। তবে এটি আসলে অসম্ভব কিছু নয়। চুলের ঘনত্ব ও চুলের গঠনে যথাসম্ভব জোর দিতে হবে। পম্পাডুর ধরনের চুলের স্টাইল এর জন্য খুবই একটি কার্যকর বিষয় হতে পারে। এই ধরনের আকৃতির মুখে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ক্লিন শেভ করলে শিশুদের মত দেখা যায়। তাই এ ক্ষেত্রে একটি বর্গাকার ধরনের দাড়ি দিয়ে সেটি দূর করতে পারেন।

বর্গাকার হলো একটি বহুমুখী মুখের আকৃতি। কেন না এ আকৃতিতে অনেক ধরনের চুলের স্টাইল মানিয়ে যেতে পারে। বর্গাকার মুখের পুরুষদের চুল মোটামুটি ছোট এবং পরিচ্ছন্ন টাইপের রাখলে মুখের সঙ্গে মানানসই দেখায়। বর্গাকার আকৃতির মুখে দাড়ি রাখতে হলে খুবই ছোট অথবা মোটামুটি লম্বা রাখা ভালো।

এ ক্ষেত্রে যেহেতু মুখ কিছুটা লম্বা, তাই একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুলের স্টাইল সন্ধান করুন। যা চুলের সঙ্গে মুখের আকৃতির একটি অভিন্ন ভাব দেবে। উপরের দিকে লম্বা চুল এবং চারপাশে চুলের দৈর্ঘ্য ছোট থাকে এমন ধরনের চুলের কাট নির্বাচন করা যেতে পারে।

ডিম্বাকৃতির মুখকে সঠিক আনুপাতিক আকৃতির মুখ বলা হয়। এই আকৃতির পুরুষরা চুলে বহু স্টাইল ব্যবহার করতে পারে। তবে এই আকৃতির পুরুষদের সাধারণত বলা হয় কপালের চুল ছেড়ে দিতে এবং এলোমেলো ঝালর জাতীয় চুল কাটা এড়িয়ে চলতে বলা হয়। সর্বাধিক ঘনত্ব রাখার জন্যে কপালের ওপরদিকে আঁচড়ে-তুলে যেকোনো একপাশে চুলের গোছা তৈরি করুন। এ ছাড়া ডিম্বাকৃতি মুখের সঙ্গে সমান আকারের একবারে খুব ছোট ছোট ও কামানো মাথাও বেশ মানানসই।

ত্রিভুজাকার আকৃতির মুখের অর্থ হলো, একটি চওড়া চোয়াল এবং সরু কপাল। তাই এ ক্ষেত্রে উপরে ও নিচের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য উপরে বেশি ভলিউম বা পুরু করে চুল রেখে তা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুল মোটামোটি বড় রেখে যেন ঘন দেখায় এ ধরনের প্রবাহমান স্বাচ্ছন্দ ধরনের স্টাইল বেঁছে নেওয়া মানানসই। তবে শক্ত ধরনের চোয়ালের জন্য চুল খুব বেশি বড় না করে ছোট ছোট করে কাটতে হবে।

ত্রিভুজাকৃতির মুখের ক্ষেত্রে চুয়াল বেশ বড় হয়ে থাকে এজন্য উপরে নিচের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বলা হয় যে ত্রিভুজ আকৃতির মুখে দাড়ি সাধারণত খাপ খায় না। ক্লিন সেভ বা ছোট ছোট দাড়ি বেছে নেওয়ায় উত্তম।

ডায়মন্ড আকৃতির মুখের সঙ্গে সাধারণত ব্যাংগস বা চুলের স্ট্র্যান্ড যা বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের হতে পারে যা কপালের উপরে পড়ে ঢেকে দেয়। ভ্রুর ঠিক উপরে চুল অনেক ভালো দেখায়। এক্ষেত্রে লম্বা ও কানের উপরে চুল এইসব আকৃতির মানুষদের মুখে ভালো একটি ট্রেকচার দেয়।

যেহেতু ডায়মন্ড আকৃতির মুখ বেশ সূচালো ধরনের, তাই এখানে মূল বিষয় হলো চুলগুলোকে তুলনামূলকভাবে লম্বা এবং লেয়ারড করে রাখা। যেন মুখে সামগ্রিক সূচালো ভাব কমে। তাই খেয়াল রাখতে হবে, চুল ছড়িয়ে থাকলে ঢেউগুলোর কোণগুলোও যেন তীক্ষ্ণ বা সুচালো না হয়। তাই চুল কাটার আগে, এই সূক্ষ্ম দিকটি খেয়াল রেখে কাট দিলে হয়তো পেয়ে যেতে পারেন আপনার সঙ্গে মানানসই চুলের স্টাইল।

চুলের স্টাইল মূলত নির্ভর করে আপনার মুখের আকৃতির উপর। আপনার যেই ধরনের মুখের আকৃতি ঠিক সেই ধরনের চুলের স্টাইল আপনার উপর মানাবে। আগে আপনার মুখে আকৃতি নির্ধারণ করুন এরপরে সেই অনুযায়ী চুলের স্টাইল বেছে নিন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি থেকে আপনি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ